চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল কাঠামো বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন: অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ

চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল কাঠামো বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন: অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ

বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কালো ফ্রেমের চশমা পড়া এ নেতা স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ার ক্ষেত্রে যেসব খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন তার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবাও অন্যতম।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বলেছেন ডা. টিভির বিশেষ অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইউজিসি অধ্যাপক ডা এবিএম আব্দুল্লাহ।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ডা. তানিয়া রহমান মিতুল।

ডক্টর টিভি: বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে একটা লেখা লিখেছেন,যা পড়ে সবাই অনুপ্রাণিত হয়েছেন। এ বিষয়টা নিয়ে কিছু বলুন।

ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ: আসলে বঙ্গবন্ধু শুধু স্বপ্ন দেখেন নাই, স্বপ্ন তার ছিল এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য যে পদক্ষেপ,যে ভিত্তি প্রস্তর সেটা কিন্তু বঙ্গবন্ধু নিজেই করে দিয়ে গিয়েছেন। উনি তো নিজের সময় পান নাই। মানুষের যে পাঁচটা মৌলিক অধিকার তার মধ্যে স্বাস্থ্য তো অন্যতম জানেন তো সবাই। এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্য কর্মসূচি বা স্বাস্থ্য চিন্তাধারা ছিল সম্পূর্ণ জনকল্যাণমুখী এবং তার চিন্তাধারাই ছিল গ্রাম,থানা, জেলা যাই বলেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের মধ্যে যেন স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যায়। তার চিন্তা চেতনা কিন্তু এটাই ছিল এবং সবসময় বলতেন গরিব মানুষ খেটে খাওয়া মানুষ তাদের দোরগোড়ায় যেন স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে এটুকু তার চিন্তাধারা ছিল। আমি আমার লেখায় এগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি।

যখন স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়, আমি খুব কাছ থেকে এগুলো দেখেছি এবং একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশ, তার অর্থনীতি বিপর্যস্ত, খাওয়া নাই, টাকা-পয়সা নাই, যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ- এই  কঠিন সময়ে বঙ্গবন্ধু, শাসন বলেন, ক্ষমতা বলেন আর যাই বলেন তাকে কিন্তু সেটা নিতে হয়েছে। চতুর্দিকে যেদিকে তাকানো যায় সেদিকে কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থা।

ডাক্তারদের তখন মর্যাদা ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির। এমবিবিএস ডিবিবিএস বঙ্গবন্ধু কিন্তু এদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেন। আর একটা জিনিস দেখেন এখন যেটা উপজেলা এখন আমরা যেটাকে বলি কমিউনিটি ক্লিনিক,কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু তখনই দেখে গেছেন কিন্তু তিনি চালু করতে পারেন নাই।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) যখন কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করলেন তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে এত সুন্দর চিন্তাধারা তিনি কী করে করলেন।তিনি বলেছিলেন যে, ‘এই স্বপ্নটা বঙ্গবন্ধুর ছিল আমি শুধু বঙ্গবন্ধু স্বপ্নটাকে বাস্তবায়ন করছি’।

কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। এই চিন্তাধারা কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ছিল।

বাংলাদেশে এসে উচ্চশিক্ষা আইপিজিএম অ্যান্ড আর-কে ( বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেন।

কারণ, শুধু এমবিবিএস পাস করলেই তো হবে না; আমাদের স্পেশালিস্ট তৈরি করতে হবে, উচ্চশিক্ষা লাগবে, রিসার্চ করা লাগবে। এছাড়াও বিসিপিএসও কিন্তু বঙ্গবন্ধু দিয়ে গেছেন, আমরা যতদূর জানি এগুলা উনার হাতেই তৈরি।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর হাতে বক্ষব্যাধি হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো তৈরি।

তার সামনে তো অনেক পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাদের হাত নাই, পা নাই, হাড্ডি ভেঙে গেছে,কত কিছু হইছে। তাই তিনি রাজধানীতে তৈরি করলেন পঙ্গু হাসপাতাল।

এখন আমাদের দেশেই দেখেন কত চিকিৎসা হচ্ছে, হার্টের অপারেশন হচ্ছে, রিং বসানো হচ্ছে, ভাল্বের চিকিৎসা হচ্ছে, লিভারের চিকিৎসা হচ্ছে, কিডনিসহ আরো কত চিকিৎসা এখন দেশেই হচ্ছে।

এদিকে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে হলে বিদেশে যেতে হত কিন্তু এখন আমাদের দেশেও স্বাস্থ্য শিক্ষায় উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া যায়।

একটা গাছের জন্য যেমন বীজ লাগাতে হয় তেমনি এই চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল কাঠামো কিন্তু বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু অনেক কিছু শেষ করতে পারেন নাই , তবে তার অসমাপ্ত কাজগুলো আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধীরে ধীরে সমাপ্ত করছেন। আর আমরা জনগণ সেই সুবিধাগুলো ভোগ করছি‌।