বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমার দুর্লভ স্মৃতি

অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম

প্রখ্যাত কিডনি বিশেষজ্ঞ, সাবেক প্রোভিসি (প্রশাসন), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমার দুর্লভ স্মৃতি

আমার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার আগেই মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। ১৯৭০ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় আমার একটা দুর্লভ সৌভাগ্য হয়। জাতির পিতাকে খুব কাছ থেকে দেখার। আমি তার পা ছুঁয়ে সালাম করেছিলাম, আমার মনে আছে। সত্তরের নির্বাচনের আগে তিনি কক্সবাজার থেকে পথসভা করে পটিয়াতে আসছিলেন।

সেদিন পটিয়ায় এসে পৌঁছাতে রাত ১১টা বেজে যায়। পটিয়া কলেজের মাঠে তাকে রিসিভ করার জন্য আমরা স্কুলের ছেলেমেয়েরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিলাম। বিশেষ করে যারা অফিসারের ছেলেরা ছিল তাদেরকে বেছে রাখা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফুল দিয়ে বরণ করার জন্য। আমিও সে গ্রুপে ছিলাম। আমরা সেসময় বঙ্গবন্ধুকে পা ছুঁয়ে সালাম করলাম। রাত ১১টা বাজে।

তিনি বক্তৃতার জন্য উঠলেন। আমার যতদূর মনে পড়ে, যাদের কথা মনে আছে-বেগম বদরুননেসা আহমেদ, আমেনা বেগম তারা সঙ্গে ছিলেন। বেগম বদরুন্নেসা ও আমেনা আপা ধবধবে সাদা শাড়ি পরা, বঙ্গবন্ধু সাদা পাঞ্জাবি পরা ছিলেন।

পরবর্তীকালে মালেক মন্ত্রিসভার সদস্য উবায়দুল্লাহ মজুমদার সেই সময় পটিয়া কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন। তিনি পটিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসউদ্দীনকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করেন, বঙ্গবন্ধু তার বক্তৃতায় শামস উদ্দীনের বহিষ্কার প্রত্যাহার করতে বলেন।

রাতের বেলায় হ্যাজাক লাইট জ্বালিয়ে মিটিং চলছিল। হ্যাজাক লাইট থেকে পোকা এসে বঙ্গবন্ধুর চুলে, পাঞ্জাবির ভেতরে আসছিল। আমরা দুই-তিনজন ছেলে উঁচু টোলের উপর দাঁড়িয়ে পোকাগুলো সরিয়ে দিচ্ছিলাম। এটা আমার জীবনের দুর্লভ স্মৃতি বা সৌভাগ্য।