জন্মনিয়ন্ত্রণে কার জন্য কোন পদ্ধতি ভালো

ডা. দীনা লায়লা হোসেন

স্ত্রী রোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

জন্মনিয়ন্ত্রণে কার জন্য কোন পদ্ধতি ভালো

চিকিৎসক
নবদম্পতি যারা একটু পরে সন্তান নিতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো পিল পদ্ধতি - প্রতীকী ছবি

কেউ সদ্য বিয়ে করেছেন, একটু দেরিতে সন্তান নেবেন। কারও একটি সন্তান আছে, পরের সন্তান নেয়ার আগে কয়েক বছর বিরতি চান। কেউ হয়তো দুই সন্তানের বাবা-মা, তাই জন্মনিয়ন্ত্রণে স্থায়ী কোনো পদ্ধতিতে যেতে চান। কেউ চান প্রসব-পরবর্তী সময়ের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, কেউ আবার চান গর্ভপাত-পরবর্তী সময়ে।

এমন অনেকেই আমাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের সঠিক পদ্ধতির বিষয়ে আলোচনার জন্য আসেন। আসলে জন্মনিয়ন্ত্রণের নানা রকম পদ্ধতি আছে। একেক দম্পতির জন্য একেক রকম পদ্ধতি ভালো। সবার জন্য একই পদ্ধতি কখনো প্রযোজ্য হতে পারে না।

জন্মনিয়ন্ত্রণে হরমোনাল কিছু পদ্ধতি আছে। রয়েছে ব্যারিরিয়ার ও এন্টিস্ট্রাইন ডিভাইস পদ্ধতি। স্থায়ী পদ্ধতি ছাড়াও হরমোনাল পদ্ধতি যেটি আমরা পিল বলে থাকি। আর জন্মনিয়ন্ত্রণে তিন মাস অন্তর ইনজেকশন রয়েছে। ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার করা হয়, যেটি তিন ও পাঁচ বছর অন্তর।

নবদম্পতি যারা একটু পরে সন্তান নিতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো পিল পদ্ধতি। এক্ষেত্রে যখন আপনি সন্তান নেয়ার পরিকল্পনা করবেন, পিল খাওয়া বন্ধ করে দিবেন। পিলের মধ্যে ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড ও ফোর্থ জেনারেশন রয়েছে। পিলের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, এগুলো সারিয়ে কীভাবে এটিকে আরও কার্যকর করা যায়, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। পিলের জেনারেশন যত বেড়েছে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ততই কমেছে। তবে পিলের দাম একটু বেড়েছে। খুব সীমিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, তাও সবার হয় না।

হরমোনাল এ পদ্ধতিতে ফোর্থ জেনারেশনে ঝুঁকি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম। বাজারে এগুলো পাওয়া না গেলে ফার্স্ট ও সেকেন্ড জেনারেশন পিল খাওয়া যেতে পারে। মুখে পাওয়ার পিল ছাড়াও লোড পিল রয়েছে। এতে হরমোনের পরিমাণ কম থাকায় শিশুর দুধ পানে কোনো সমস্যা হয় না। তবে এটি সেবনে অনেকের অনিয়মিত মাসিক হবে, কারও কারও মাসিক একেবারেই হয় না। হলেও মাঝেমধ্যে অল্প অল্প হয়ে থাকে।

পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নারীদের পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির বিশেষ চাহিদা রয়েছে; তাদের বেশির ভাগেরই অন্তত দুটি সন্তান রয়েছে এবং আর সন্তান নিতে চান না। এ বয়সে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা অন্য পদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে অনেকে চিন্তিত হন। আসলে একজন সুস্থ মধ্যবয়সী নারীর জন্য সব পদ্ধতিই নিরাপদ। তবে বয়স্ক নারীদের, যাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি অথবা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের পিল এবং ইনজেকশন ব্যবহার করা উচিত নয়। তাদের জন্য কপার-টি এবং স্থায়ী পদ্ধতিই বেশি উপযোগী।

কমবয়সী নারী-পুরুষের স্থায়ী পদ্ধতি, অর্থাৎ নারীর ক্ষেত্রে লাইগেশন এবং পুরুষের ভ্যাসেকটমি পদ্ধতি গ্রহণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।




আরওঃ   ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল