হিটস্ট্রোকঃ না জেনে ফল খেলে বিপদ হতে পারে

হিটস্ট্রোকঃ না জেনে ফল খেলে বিপদ হতে পারে

হিটস্ট্রোক
হিটস্ট্রোকঃ না জেনে ফল খেলে বিপদ হতে পারে (ইনসেটে ডা. সাঈদ এনাম) - ফাইল ছবি

হিট স্ট্রোক মানে হলো অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ১০৪ -১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে উঠা যা সাধারণত প্রচন্ড জ্বরে হয়। 


হিট স্ট্রোকের ফলে অস্বাভাবিক মানসিক আচরণ দেখা দিতে পারে, যেমন কনফিউশান, বিড় বিড় করা, অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা, হ্যালুসিনেশন, মাথাব্যথা হওয়া, ঝিম ঝিম করা, হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেরা।


হিট স্ট্রোকে মুলত শরীরের কুলিং সিস্টেম ফেইল করে। এতে ঘাম কমে গিয়ে শরীর শুষ্ক হয়ে যায়, বমি বমি ভাব হয়, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, ডিহাইড্রেশন এর ফলে ইলেকট্রোলাইটস ইম ব্যালেন্স হয়, মানুষ  অজ্ঞান হয়ে যায় এমন কি শুরু হতে পারে খিচুনি। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


ফল কি হিট স্ট্রোকের জন্যে উপকারী? 


ফল খাওয়া হিট স্ট্রোকের জন্যে উপকারী হলেও কিছু ফল হিট স্ট্রোকে বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই হিট স্ট্রোকে কোন ফল উপকারী এবং কোন ফল অপকারী এটা না জেনে ফল খেলে হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে।


হিট স্ট্রোক এড়াতে উপকারী ফলঃ

কম ক্যালরি যুক্ত, এবং কম চিনিযুক্ত রসালো ফল হিট স্ট্রোকের জন্যে উপকারী। এর মধ্যে প্রথমেই  রয়েছে শসা, জাম্বুরা, আনারস, তরমুজ। এছাড়া  নাশপাতি, কাঁচা আম (সবুজ আম), কাচা পেপে (সবুজ পেপে) , আপেল, স্ট্রবেরি, গোলাপ, জাম্বুরা, লেবুও কম ক্যালরি যুক্ত ফল। এসব ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা শরীরের জন্যে খুবই  উপকারী। 


হিট স্ট্রোকের জন্যে অপকারী বা ক্ষতিকর ফলঃ

সাধারণত প্রচুর চিনিযুক্ত ফল এবং উচ্চ ক্যালরি উৎপন্নকারী ফল যেমন পাকা কাঠাল, পেয়ারা, পাকা আম, আঙ্গুর, লংগান, লিচু, পাকা কাঁঠাল, পাকা কলা, পাকা পেঁপে (হলুদ পেপে), প্যাশন ফল, লাল ডালিম, মিষ্টি তেঁতুল, পেয়ারা।


মনে রাখবেন পাঁকা পেপে ও পাঁকা কাঠাল হিট স্ট্রোকের বিপত্তি বাড়িয়ে দিবে এবং গরম পানীয় যেমন চা ও কফি পান করা যাবে না।


হিট স্ট্রোকে করণীয়ঃ

শরীরকে ঠান্ডা করা অর্থাৎ ঠান্ডা পানি দিয়ে মুছে দেওয়া বার বার, ছায়া ও বাতাস যুক্ত স্থানে বসা, ঠান্ডা পানি দিয়ে তোয়ালে বা গামছা ভিজিয়ে ঘাড় মাথা, উরু স্পঞ্জিং করা। ঘাড়ে ঠান্ডা পানিতে ভিজানো রুমাল রাখা যেতে পারে। ডিহাইড্রেশন এবং পিপাসা কমাতে নরমাল ঠান্ডা পানি, লেবুর শরবত এবং খাবার স্যালাইন খুবই উপকারী। তবে খাবার স্যালাইন নিয়ম মতো বানাতে হবে।

লেখকঃ

ডা. মো. সাঈদ এনাম 
এম বি বি এস (ডিএমসি) এমফিল (সাইকিয়াট্রি) 


সহকারী অধ্যাপক সাইকিয়াট্রি 
ফেলো, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন


আরও দেখুন: