রেড ক্রিসেন্টের নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. উবায়দুল কবীর চৌধুরী

রেড ক্রিসেন্টের নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. উবায়দুল কবীর চৌধুরী

রেড ক্রিসেন্ট
রেড ক্রিসেন্টের নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. উবায়দুল কবীর চৌধুরী - ফাইল ছবি

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী। আগামীকাল রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে আগামী তিন বছর সংগঠনটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মো: সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আদেশ, ১৯৭৩ (রাষ্ট্রপতির ১৯৭৩ সনের ২ নং আদেশ-এর ১০ (১) আর্টিকেল এ বর্ণিত ক্ষমতাবলে অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরীকে ৩ (তিন) বছর মেয়াদে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব স্নেহাশিস দাশ স্বাক্ষরিত অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরীকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী ১৯৭৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। একই কলেজে ১৯৭৬ সালে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি ভিয়েনা ইউনিভার্সিটি থেকে এক্সিলেন্ট গ্রেডে চর্ম ও যৌনরোগে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। অতঃপর গ্লাসগো রয়েল কলেজ ফেলোশিপ সনদ এবং আমেরিকান কলেজ অব এনজিওলজি থেকে এ্যাসোসিয়েট ফেলো নির্বাচিত হন। তিনি বর্তমানে আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজির আর্ন্তজাতিক ফেলো হিসাবে সংযুক্ত আছেন এবং প্রতি বছর আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি লন্ডনের সেন্টথমাস হসপিটালে স্কিন প্যাথলজি, আমেরিকার হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলে লেজার ও দিল্লির এইমস থেকে স্কিন সার্জারিসহ স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। কানাডার অটোয়া ইউনিভার্সিটি ও আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব মিসিসিপি মেডিকেল সেন্টারে ভিজিটিং অধ্যাপক হিসাবে বিভিন্ন সময়ে পাঠদান করেন। বর্তমানে তিনি এম. এইচ. শমরিতা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। উল্লেখ্য, তিনি ২০০৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র চিকিৎসক হিসাবে কানাডার অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ‘Kabir’s Dermatology in Practice’ ও ‘A Treatise on Topical Corticosteroids in Dermatology’ সহ অনেক প্রসিদ্ধ গ্রন্থের প্রণেতা। তিনি বৃক্ষমানব খ্যাত আবুল বাজানদারের চিকিৎসায় অন্যতম স্কিন ও লেজার সার্জন হিসাবে অংশগ্রহণ করেন এবং জটিলরোগের সফল চিকিৎসা করে বিশ্বখ্যাতি অর্জন করেন।

সোসাইটির নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কবীর চৌধুরী মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ভাটিপাড়া ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা প্রদান করার পাশাপাশি শহীদ মুক্তিযোদ্ধার জানাজা ও সমাধির ব্যবস্থা করেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসাবে দায়িত্বরত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু পরিবারের আহত সদস্যদের জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। চিকিৎসা শাস্ত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধ্যাপক ডা. এম. ইউ. কবীর চৌধুরী ২০২০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি ভারতের অল ইন্ডিয়া মহাত্মা গান্ধী ইন্সস্টিটিউট অব কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও চিকিৎসা সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০২৩ সালে ‘মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।

সর্বোপরি, তিনি প্রায় ৫০ বছরের কর্মজীবনে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজসহ ঢাকার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে বিনামূল্যে পাঠদান করেন। তিনি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একজন আজীবন সদস্য।



ইভেন্ট স্ট্রিম : চিকিৎসকদের পদোন্নতি