প্রিম্যাচিউর শিশুদের ব্রেস্টফিডিং করানোর উপায়

ডা. দীনা লায়লা হোসেন

স্ত্রী রোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

প্রিম্যাচিউর শিশুদের ব্রেস্টফিডিং করানোর উপায়

ব্রেস্টফিডিং
প্রিম্যাচিউর শিশুদের ব্রেস্টফিডিং করানোর উপায় - ছবি- সংগৃহীত

বাচ্চা জন্মের পর ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। কিন্তু অনেক সময় বাচ্চা যদি প্রিম্যাচিউর থাকে, মায়ের নিপল বা বোটা চুষতে না পারে, বাচ্চার যদি দিয়ে ঠোঁট কাটা থাকে, বাচ্চার হার্টে বা ফুসফুসে কোন সমস্যা, যে কারণে বাচ্চা টেনে খেলে নীল হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে মায়ের চিন্তিত হয়ে পড়েন। এ সময় আমাদের কাছে প্রশ্ন করেন বাচ্চকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারছি না। এখন কি করব?

আমরা সবসময়ই বাচ্চাকে ছয় মাস পর্যন্ত ব্রেস্টফিডিং করাতে বলি। এখনও সেটাই বলবো, তবে এক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধ টেনে বের করে ড্রপার বা অন্য কোনো মাধ্যমে বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে। যদি মা এবং বাচ্চা দুজনেই সুস্থ থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে বাচ্চার ছয় মাস বয়স পর্যন্ত বাচ্চাকে অবশ্যই শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।

এক্ষেত্রে মায়ের যেমন সহযোগিতা লাগবে তেমনি পরিবারের প্রতিটি সদস্যের রেস্পন্সিবিলিটি নিতে হবে। নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে মায়ের কেয়ারে যারা থাকবেন যেমন ডেলিভারির পর মায়ের শরীরে পেইন থাকে, মায়ের মুভমেন্টে তখন যদি কিছুটা রেস্ট্রিকশন থাকে, তখন মাকে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে, বাচ্চাকে মায়ের কাছে এনে দেয়া এভাবে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা করতে হবে।

আর বাচ্চা সিজারে হলে, তখন সাধারণত দু-একদিন মায়ের হেল্প লাগে, তখন যিনি কেয়ারে থাকবেন তিনি মাকে মোটিভেট করবেন, বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের পজিশন ঠিক করে দেবেন। মায়ের ব্রেস্ট এবং বাচ্চার মুখের সাথে যে অ্যাটাচমেন্ট সেটা তৈরি করে দিতে হবে।

যেসব চিকিৎসকের কাছে ডেলিভারি হচ্ছে তাদের আগে থেকেই মাকে বলে দেয়া যে, ব্রেস্টফিডিং এর কি কি উপকারিতা, এক্ষেত্রে মায়ের জন্য কি কি উপকারিতা, বাচ্চার জন্য কি কি উপকারিতা, সংসারের জন্য কি কি উপকারিতা আছে। পরবর্তীতে সমাজের জন্য কি কি উপকারিতা, বাচ্চার ইমিডিয়েট যেসকল উপকারিতা হচ্ছে এবং পরবর্তীতে বাচ্চার ব্রেইন ডেভলপমেন্ট, শারীরিক ডেভেলপমেন্ট এগুলো মাকে বুঝিয়ে বলতে হবে।

ফলে মা বাচ্চাকে ব্রেস্ট ফিডিং করানোর ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রে ডাক্তাররা মায়ের নিপল চেক করে নেয়া এবং নিপল যদি বসে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে কিভাবে প্রতিদিন নিপল মাসাজ করতে হবে সেগুলোও শিখিয়ে দিবেন। আমাদের ডাক্তার, নার্স সবাইকে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

আর পরিবার থেকে মায়ের পুষ্টিকর খাবারের ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে হবে। মায়ের প্রোটিন জাতীয় খাবার তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। যাতে করে মা ঠিকমত বাচ্চাকে ব্রেস্টফিডিং করাতে পারে।