মেডিকেলের পড়া কঠিন কিন্তু অসম্ভব না

মেডিকেলের পড়া কঠিন কিন্তু অসম্ভব না

মেডিকেল শিক্ষা
পরীক্ষার আগে একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর প্রস্তুতির দৃশ্য (ইনসেটে লেখক) - সংগৃহীত

* দুনিয়াতে এই মেয়েই একা মেডিকেলে পড়ে যে কিনা এতগুলো বই খাতা একসাথে খুলে পড়ে।

* মেডিকেলে পড়ে বলে শো অফ করে!

* মানুষকে এগুলো দেখিয়ে ডিমোটিভেট করতেছে---

যারা এমন ভাবেন তাদের জন্য....

মেডিকেলের পড়া কঠিন কিন্তু ইম্পসিবল না, এটা আমি সবসময়ই বলি। আমি সবসময় এটা দেখানোর ট্রাই করি- নিজের জীবন এঞ্জয় করেও আরামসে মেডিক্যাল এ পড়ে পাশ করা যায়, যদি না তোমার ভাগ্য খারাপ থাকে।

এটা কোন প্রাইমারি স্কুলের এক্সাম না যে, আমি একটা বই খুলে বসে থাকবো। এটা আমার সারাবছরের পরিশ্রম। আমার মেডিকেলে ভর্তির পর থেকে প্রতিদিন করার কষ্টের পরিশ্রম।
এর নাম ফাইনাল প্রফ।

এই পরীক্ষায় পাশ করলে নামের আগে ডাক্তার।

বুঝাই যাচ্ছে এই এক্সামটা মানুষের লাইফের কতটা ইম্পোর্টেন্ট।

এটা আমার মেডিসিন ভাইবার আগের দিনের ছবি। রাত পেরোলেই আমার মেডিসিন ভাইভা। পেপার ওয়ান টু একসাথে। দুটো ভাইবা বোর্ড, লং কেসের ভাইভা, শর্ট কেসের ভাইবা সাথে পেডিয়াট্রিকস বোর্ড ভাইবা।

টোটাল আমাকে পাঁচবার ভাইভা দিতে হয়েছে।

দুই পেপারে ৪টা গাইড। সাথে থাকে এক্সরে, ইসিজি ইন্সট্রুমেন্ট- এগুলার জন্য আরও গাইড। টিচারের লেকচারের শিট, আমার টেক্সটবুক, পেডি বই, শর্ট কেসের বই, লং কেসের বই, নিজের নোটখাতা, রাফ লিখার জন্য খাতা। এগুলো সব আমার এক্সামের আগে দেখা লাগে।
আমার এত বই খাতা নিয়ে টেবিলে পড়া হয় না, তাই আমি খাটে পড়ি সব একবারে নিয়ে।
আমি তো মনে করি এখানে আমি আরো কম বই খুলেছি।

এখন আমি কেন বইয়ের পাতা খুলে রাখলাম।

আমি বন্ধ করে রাখলে আমার এই পেইজ উল্টানোর জন্য এক্সামের আগে একজন এসিস্ট্যান্ট রাখা লাগবে।

এত পেজ উল্টায়ে কোন পড়া কত পেজে খোঁজার সময় আমাদের হাতে থাকে না।

আমাদের মেডিকেল স্টুডেন্টদের কাছে এগুলা নরমাল। যারা জীবনে মেডিক্যাল নিয়ে কোন জ্ঞান নাই, ফ্যামিলিতে কেউ মেডিক্যালে নাই তারাই এসব নিয়ে কথা শুনাবে।

আমাদের নিজেদের সুপিরিয়র আমরা বানাই না। মুখেও বলি না, নিজের চার ভাগের একভাগ স্ট্রাগল শেয়ারও করি না। তাতেই মানুষ শো অফ ভাবে।

এটা ফাইনাল প্রফ। Hardest exam সব থেকে। যে দেয় সে জানে।

জুনিয়রদের জন্য,
প্রফ অন্যরকম জিনিস। যখন মেডিকেলে আসবা সবকিছুর সাথেই অভ্যস্ত হয়ে যাবা। আমরা পেরেছি তোমরাও পারবা।
Nothing is impossible.

মানুষের অনেক কথাও শুনবা। কারণ, এদের কাজই নিজেরা ইনফিরিয়র কম্পেক্সিটিতে ভুগে ডাক্তারদের গালি দিবে আজীবন। ইচ্ছা থাকলে সবই হয়।এটা আমার একদিনের গল্প
না দীর্ঘদিনের গল্প।

সাদা এপ্রন পরার স্বপ্ন দেখা সহজ। কিন্তু এটা গায়ে রেখে টিকে থাকা অনেক কঠিন। যেখানে পদে পদে মানুষ তোমাকে ছোট করতে চাইবে।
All the best.