সেরা ডাক্তাররা হাসপাতালে সেবা দিয়ে মাসে পাবেন ২০ হাজার টাকা

সেরা ডাক্তাররা হাসপাতালে সেবা দিয়ে মাসে পাবেন ২০ হাজার টাকা

বিএসএমএমইউ
‘সেরা ডাক্তাররা হাসপাতালে সেবা দিয়ে মাসে পাবেন ২০ হাজার টাকা’- এই বিষয়ে লিখেছেন : অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন (শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) - সংগৃহীত

একটি স্টেটাস পড়ে জানলাম যে পিজি হাসপাতালের ডাক্তারের বেতন ২০,০০০ (বিশ হাজার) টাকা! সাথে তাদের private চেম্বার করা নিষিদ্ধ। এইটা প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। এটা পড়ে মনে হচ্ছিল impossible, হতেই পারে না। লেখাটি পড়ে আরো জানলাম যে পিজি হাসপাতালে যতো ডাক্তার, তাদের ৭০%-ই রেসিডেন্ট ডাক্তার। অর্থাৎ তারা MBBS শেষ করে মিনিমাম ২ বছর ডাক্তার হিসেবে সেবা দিয়ে এখন বিশেষজ্ঞ হওয়ার জন্য এই হাসপাতালে এসেছেন। এই রেসিডেন্ট ডাক্তাররা হাজার হাজার ডাক্তারদের সাথে প্রতিযোগিতা করে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পেয়ে তারপর এসেছেন। তার মানে তারা শুধুই সাধারণ ডাক্তার না। এইচএসসি পাশ করে অত্যন্ত ভালো রেজাল্ট করে অসংখ্য ভালো রেজাল্টধারীদের সাথে ভর্তি পরীক্ষার লড়াইয়ে জিতে ৫ বছরের এমবিবিএস কোর্স পাশ করে ডাক্তার নামের তকমাটি পান যা আমাদের মাস্টার্স ডিগ্রী ৪+১=৫ সমতুল্য। যখন পিজি হাসপাতালে রেসিডেন্ট ডাক্তার হন তখন অনেকের বয়স প্রায় ৩০ বা তার বেশি।

সাধারণ শিক্ষায় মাস্টার্স পাশ করে যারা বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকুরী পায় কিংবা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা চাকুরী পায় তাদের বেতন অনেক বেশি। এই রেসিডেন্ট ডাক্তারদের মধ্যে অনেকের নিশ্চই পরিবার আছে, বাবা-মা এবং এক্সটেন্ডেড পরিবার আছে। আর যেহেতু চাকুরী ঢাকায় নিশ্চই ঢাকা শহরে থাকতে হয়। অথচ বেতন ২০ হাজার। টাকা এবং চেম্বার করা নিষেধ। একই সাথে তাদের নাকি ঈদ বোনাস নাই, বৈশাখী ভাতা নাই, চিকিৎসা ভাতা নাই। এই একই বেতন ৫ বছর ধরে পাবে, এক টাকাও বাড়বে না। যদি কোনো পরীক্ষায় fail করে তবে বেতন বন্ধ। ৬ মাস পর আবার পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলে পুনরায় বেতন দিবে।

এরপর লেখাটি আর পড়তে পারিনি। একটা রাষ্ট্র কিভাবে তার মেধাবীদের এত বড় অন্যায় করে? এমনিতেই যেই ডাক্তাররা বিসিএস দিয়ে বিসিএস ডাক্তার হয়ে উপজেলা লেভেলে যায় সেখানে প্রশাসন কর্মকর্তাদের দ্বারা নানাভাবে নিগৃহীত তো হয়ই,,, আর সেরা ডাক্তাররা পিজি হাসপাতালে সেবা দিয়েও মাসে পাবেন ২০ হাজার টাকা।

আমি কি এমনি এমনি বলি যে, এই দেশ হলো মেধাবীদের জন্য কসাইখানা। এখানে ভালো থাকতে হলে স্মার্ট হতে হবে। কিভাবে কম পড়ে, কম জেনে, কম শিখে, কম সেবা দিয়ে বেশি লাভ পাওয়া যায় সেই সূত্র জানতে হবে।

এইবার আবার আমরা অফিসিয়াললি স্মার্ট বাংলাদেশ বানাতে যাচ্ছি। সেই বাংলাদেশের কথা ভাবলে আমার এখনই জ্বর এসে যায়।