উত্তর দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল কাদের

চোখের সমস্যা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

উত্তর দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল কাদের

চোখের সমস্যা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

মানুষের শরীরে চোখ খুবই স্পর্শকাতর অঙ্গ। যে ব্যক্তি তার চোখ দুটি দিয়ে কিছুই দেখতে পায় না তাকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যহত ব্যক্তি। এই জন্য চোখে কোন সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে সেবা নিতে বলছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা।  গত ২০ অক্টোবর ডক্টর টিভির 'দৃষ্টি আলাপন' অনুষ্ঠানে চোখের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে দর্শকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল কাদের।  অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন ডা. কে জান্নাত

ডক্টর টিভি: ভাইরাল, ব্যাকটেরিয়াল এবং ফাংগাল আলসার কিভাবে পৃথক করেন? এগুলো কী ক্লিনিক্যালি আলাদা করেন না এদের কোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনভেস্টিগেশন আছে?

অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল কাদের: প্রথমত আমরা রোগীর কাছ থেকে সমস্ত হিস্ট্রি নেয়ার পর স্লিভলেস নামক যন্ত্রের সাহায্যে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখি। তারপর আমরা আলসারের যে চরিত্র তা আমরা সরাসরি দেখতে পাই। আমরা এই আলসারের চরিত্র দেখে বলতে পারি এটি ভাইরাল না ব্যাকটেরিয়া না ফাংগাল আলসার। যদি কনফিউশন হয়ে যায় তখন আমরা যে আলসার হয়েছে ওখান থেকে ময়লা বা টিস্যুটা নিয়ে পরীক্ষা করি।

তারপর আমরা কেওইজ, গ্রামাস্টাইন এবং কালচার নামক পরীক্ষাগুলো করে থাকি। কেওইজ করে আমরা ফাংগাল দেখতে পারি, গ্রামাইস্টাইন করে আমরা ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাল দেখতে পারি আর কালচার করে আমরা সবগুলো দেখতে পারি। এভাবে আমরা কি হয়েছে তা ডায়গনিস্টে কনফার্ম করে চিকিৎসার দিকে চলে যায়।

ডক্টর টিভি: এই (ভাইরাল, ব্যাকটেরিয়াল এবং ফাংগাল আলসার) রোগগুলোর চিকিৎসা কিভাবে করে থাকেন?

ডা. মো. আব্দুল কাদের: আমরা দুইভাবে চিকিৎসা দেই। এক: তাকে ভাল রাখা বা তার কষ্ট দূর করার জন্য চিকিৎসা দেই। আর দুই: তার রোগের নিরাময় করার জন্য চিকিৎসা দেই।

প্রথমত যেহেতু তার ফটোফোভিয়া আছে তাই প্রথম সমস্যার জন্য তাকে রোদ চশমা দেই। কারণ চশমা দিলে সে রোদে তাকাতে পারে। দ্বিতীয়ত যেহেতু ব্যথা হয় তাই ব্যথা দূর করার জন্য তাকে ব্যথা নিরোধক ওষুধ দেই। অল্প ব্যথা হলে প্যারাসিটামল আর একটু বেশি হলে পটোরোলাক আর তার চেয়ে বেশি হলে তীব্র ব্যথা নিরোধক ওষুধ দেই। আরও কিছু জিনিস হয় যেমন তার যদি কর্নিয়াল আলসার হয় তার সাথে তার ইউভাইটিসও হয়।

প্রচণ্ড ব্যথা কমানোর জন্য আমরা মাইড্রেটিক নামক একটা ড্রপ দিয়ে থাকি। আবার দেখা যায় যে কর্নিয়াল আলসার হলে তাদের চোখের প্রেশার বেড়ে যায়। আর এই প্রেশার কমানোর জন্য তাকে আমরা খাওয়ার ওষুধও দিতে পারি আবার ড্রপও দিয়ে থাকি। এটা হচ্ছে রোগীকে আরাম দেওয়ার চিকিৎসা। আবার আমরা আরেকটা কাজ করে থাকি। সে যে জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে সে জীবাণু নির্মূল করার চেষ্টা করি।

জীবাণুটা নির্ণয় করার পর যদি ব্যাকটেরিয়াল হয়ে থাকে তাহলে তাকে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ড্রাগ দেই। যেমন ডেসিপপ্রক্সসাইসিন, কানামাইসিন ও ট্রুপ্রামাইসিন ইত্যাদি ওষুধগুলো দিয়ে ব্যাকটেরিয়াল কর্নিয়াল আলসারের চিকিৎসা করে থাকি। ফাংগাল কর্নিয়াল আলসার হলে আমরা এন্টি ফাংগাল ড্রাগ দেই। যেমন, নাটামাইসিন, এম্পুটারানিভ বি আর কোনাজল ইত্যাদি দিয়ে থাকি। এভাবে আমরা ড্রপ আকারে, মলম আকারে আবার ট্যাবলেট আকারে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকি।

 

→ অনুষ্ঠানের পুরো ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন


আরও দেখুন: