জাতিসংঘের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

করোনা প্রমাণ করেছে আমাদের সবার ভাগ্য একই সূত্রে গাঁথা

জাতিসংঘের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

করোনা প্রমাণ করেছে আমাদের সবার ভাগ্য একই সূত্রে গাঁথা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভাব্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সময়োপযোগী ও সমান প্রাপ্তি নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।  সম্ভাব্য ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে উন্নত দেশগুলোর ‘ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ’ এর একটি দৃশ্যমান প্রবণতা দেখা দেয়ার প্রেক্ষিতে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণে একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আশা করা হচ্ছে বিশ্ব শিগগিরই কোভিড-১৯-এর ভ্যাক্সিন পাবে। এই ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা প্রয়োজন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোভিড-১৯ প্রমাণ করেছে, আমাদের সকলের ভাগ্য একই সূত্রে গাঁথা। কাজেই সকল দেশ যাতে এই ভ্যাকসিন সময় মত এবং একইসঙ্গে পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫ তম অধিবেশনে দেশের পক্ষে ভার্চুয়াল ভাষণে এ আহবান জানান।
পূর্বে ধারণকৃত এই ভাষণে শেখ হাসিনা দেশের ওষুধ শিল্পের অবকাঠামোগত সক্ষমতার বিষয়টির উল্লেখ করে বলেন, ‘কারিগরি জ্ঞান ও মেধাসত্ব প্রদান করা হলে, এই ভ্যাকসিন বিপুল পরিমাণে উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রকদের মতে গবেষকরা মানবদেহে ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলিতে ৪২ টি ভ্যাকসিন পরীক্ষা করছেন এবং কমপক্ষে ৯৩ টি প্রাক্কলিত ভ্যাকসিন প্রাণীতে সক্রিয় তদন্তাধীন রয়েছে। তবে উন্নত দেশগুলো টিকা গ্রহণকারীদের দ্রুত ইনোকুলেটগুলির সহজলভ্যতার জন্য আদেশ দিচ্ছিল যার ফলে মহামারীটি দীর্ঘায়িত হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারী নিরসনে আমাদের উদ্যোগ এবং এজেন্ডা-২০৩০ অর্জনে আমাদের প্রচেষ্টা সমানতালে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের দ্বিতীয় ভলান্টারি ন্যাশনাল রিভিউ রিপোর্ট উপস্থাপন প্রমাণ করে যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে আমরা যথাযথভাবে এগিয়ে চলেছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রতিবছরের মত এবারও বাংলায় ভাষণ দেন।

কোভিড-১৯ এর কারণে জাতিসংঘের ইতিহাসে এই প্রথম নিউইয়র্কের সদর দপ্তরে সদস্য দেশসমূহের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণের অনুপস্থিতিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

শেখ হাসিনা মহামারী কার্যকরভাবে মোকাবেলায় সঠিক নেতৃত্বের নির্দেশনায় ‘সম্মিলিত ব্যবস্থা’ নেয়ারও আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যেমন জাতিসংঘ সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বের সকল দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের উপর গুরুত্বারোপের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল, তেমনি এই মহামারী আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক নেতৃত্ব প্রদানের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে।’

করোনাভাইরাস আমাদের অনেকটাই ঘরবন্দি করে ফেলেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কেউই সুরক্ষিত নই, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি। এর প্রভাবে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকান্ড মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিদ্যমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ আরও প্রকট হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ মহামারী আমাদের উপলদ্ধি করতে বাধ্য করেছে যে, এ সঙ্কট উত্তরণে বহুপাক্ষিকতাবাদের বিকল্প নেই।’