আরওপি রোগ

বছরে অন্ধত্বের ঝুঁকিতে ৮০ হাজার অপরিণত নবজাতক

আরওপি রোগ

বছরে অন্ধত্বের ঝুঁকিতে ৮০ হাজার অপরিণত নবজাতক

আরওপি’তে আক্রান্ত এক শিশুর চোখের পরীক্ষা চলছে - ছবি: ফখরুল ইসলাম, ডক্টর টিভি

ফুটফুটে অপরিণত নবজাতক ইয়াসফিনকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছেন তার মা।  গর্ভধারণের সাড়ে সাত মাসের মাথায় জন্ম হওয়ায় চোখের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসতে হয়েছে নবজাতককে। ইয়াসফিনের মা বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষার পর তিনি জানতে পারেন, অন্ধত্বজনিত চোখের রোগ আরওপি‘তে আক্রান্ত তার সন্তান। তাই চোখের লেজার ট্রিটমেন্টের জন্য নিতে হবে অপারেশন থিয়েটারে। ‘লেজার ট্রিটমেন্ট’ দেয়ার পর চিকিৎসকরা বলেন, চিরতরে অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেয়েছে ইয়াসফিন।

২০১২ সাল থেকে আরওপি নিয়ে কাজ করা অরবিস ইন্টারন্যাশনালের তথ্য বলছে, দেশে অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়া ৪ লাখ শিশুর ৭০ শতাংশই রাজধানীর বাইরের। যেখানে আরওপিজনিত অন্ধত্বের মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রায় ৮০ হাজার শিশুকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচিউরিটি বা আরওপি অন্ধত্বজনিত একটি চোখের রোগ। ৩৫ সপ্তাহের আগে জন্ম নেয়া শিশুর ওজন ২ কেজির কম হলে শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হয়। বেশিরভাগ মানুষের এই রোগ সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকায় অন্ধত্বের শিকার হচ্ছে অপরিণত নবজাতকেরা।

এই বিষয়ে ইস্পাহানী ইসলামিয়া আই হসপাতালের রেটিনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও আরওপি বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুন নাহার ডক্টর টিভিকে বলেন, অপরিণত বয়সে জন্ম নেয়া শিশুদের আরওপি' হলে চোখের রেটিনার রক্তনালী অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। ঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়ে কখনও কখনও রেটিনা পর্যন্ত ছিঁড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, এসব শিশুদের অন্ধত্বের হাত থেকে বাঁচাতে জন্মের ২৮ দিনের মধ্যে অবশ্যই চোখের আরওপি পরীক্ষা করাতে হবে।  না হলে ছয় মাসের আগেই অপরিণত নবজাতক পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

আরওপি মোকাবিলায় অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর, ডা. মুনীর আহমেদ ডক্টর টিভিকে বলেন, রোগটি প্রতিরোধে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি নবজাতক, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সমন্বয় করে এসব রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

ভিডিও লিংক