সিরিয়াল ছাড়া রোগী দেখাতে চিকিৎসকের চেম্বারে হট্টগোল!

সিরিয়াল ছাড়া রোগী দেখাতে চিকিৎসকের চেম্বারে হট্টগোল!

চেম্বার
চিকিৎসকের চেম্বার (ইনসেটে ডা. কামরুজ্জামান নাবিল) - ফাইল ছবি

শিশু বিভাগের আউটডোরে আছি, সিরিয়ালে থাকা একটির পর একটি রোগী রুমে প্রবেশ করছে। সকাল নয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত চলবে রোগী দেখা।

হঠাৎ রুমের সামনে হট্টোগোলের শব্দ, ম্যাডাম সিরিয়াল লেখার দায়িত্বে থাকা পোর্টালকে ডেকে জানতে চাইলেন, বাইরে হট্টোগোল কীসের? পোর্টাল জানালো, ফরিদপুর থেকে এক পরিবার তার শিশুকে নিয়ে আসছে দেখাতে। যদিও সিরিয়াল পাইনি। আপনার সাথে কথা বলতে চায়। ম্যাডাম রুমে আসতে বললেন, জানালেন আমার সিরিয়ালে থাকা রোগীদের সময়ের মাঝে দেখা শেষ হলে আপনার শিশুকে দেখতে পারবো।

কিছুক্ষণ পরে আবারও চেঁচামেচির শব্দ, ম্যাডাম আবারও পোর্টালকে জিজ্ঞাসা করলেন, রোগীর মা ভেতরে প্রবেশ করে জানালেন, আমি চাকরি থেকে কয়েক ঘণ্টার ছুটি নিয়ে বাবুকে দেখাতে নিয়ে আসছি যদি দেখে দিতেন, এবারও ম্যাডাম জানালেন, সিরিয়ালে থাকা রোগীদের দেখা শেষ হলে সময় পেলে দেখে দিতে পারবো।

আবারও কিছুক্ষণ পরে বাইরে থেকে শব্দ, এবারও ডাক দিতে বললেন, রোগীর বাবা জানালেন গাজীপুর থেকে একজন ডাক্তার রেফার্ড করেছেন। ম্যাডাম বললেন, সেই পূর্বের কথাই। তবে এই বাবা রেগে গেলেন। বললেন, এখানে দেখাবোই না, অতঃপর ক্ষিপ্ত হয়ে চলে গেলেন।

কিছুক্ষণ পরে ম্যাডাম পোর্টালকে জিজ্ঞাসা করলেন, রেগে যাওয়া তারা কি চলে গেছে? পোর্টাল হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলো। আবারও বাইরে শব্দ, দরজা খোলা থাকায় সেই রোগীর বাবার কিছুটা এমন কথা শোনা যাচ্ছিলো, প্রয়োজনে বাইরে চেম্বারে যে ফি দেয়া হয় সেটিই দিবেন তিনি। ম্যাডাম তাদের ভেতরে ডাক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, এমন কথা কীভাবে বলতে পারেন।

এটি আমাদের সেদিনের কয়েকঘন্টার আউটডোরের চিত্র ছিল। প্রতিদিন ঘটে যাওয়া এমন অবস্থায় একজন চিকিৎসককে একরকম বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয়। আর যারা আগে থেকে সিরিয়াল নিয়ে রোগী দেখতে আসেন তাদেরও সময় ক্ষেপণ হয়।

রোগীর পরিবারের চেষ্টা করা উচিত আগে থেকেই সিরিয়াল নিয়ে রোগী দেখাতে নিয়ে আসা এবং এর পাশাপাশি যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগীদের রেফার্ড করে থাকেন তাঁদেরও উচিত রোগীদের পূর্বেই সিরিয়াল নেবার কথাটি মনে করিয়ে দেয়া।

লেখকঃ

ডা. কামরুজ্জামান নাবিল
বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা।