টিনেজ প্রেগনেন্সির ঝুঁকি

অধ্যাপক ডা. কোহিনুর বেগম

প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ

টিনেজ প্রেগনেন্সির ঝুঁকি

প্রেগনেন্সি
টিনেজ প্রেগনেন্সির ঝুঁকি - ফাইল ছবি

আমাদের দেশে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সে মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে বেশি। বড় একটি অংশ এই সময়ে সন্তানও নিচ্ছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের ৬৬ শতাংশ একটি সন্তান জন্ম দিয়ে দ্বিতীয়বার গর্ভধারণ করছে। টিনেজ মায়েদের জন্য এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

অল্প বয়সে বিয়ের কারণেই তারা মা হচ্ছে। পারিপার্শ্বিক নানা কারণে আমরা বাল্যবিয়ে ঠেকাতে পারব না। তবে আমরা তাদের এটা তো বলতে পারব, তুমি এই বয়সে সন্তান নিও না, নিলে তোমারই ক্ষতি হবে।

এখন প্রশ্ন থাকতে পারে, কোন সন্তান নেব না? কারণ কিশোরী বয়সে গর্ভধারণে মা এবং সন্তান— দুজনেরই সমস্যা হয়। এ সময় মায়েদের শারীরিক ও মানসিক ফিজিক্যাল দেখা দেয়। সন্তান প্রসব এবং প্রসব পরবর্তী নানা সমস্যা ভর করে।

এসব সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়। এতে করে প্রি-এক্লেমশিয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। রক্ত শূন্যতা দেখা দেয় এবং সংক্রমণ বেশি হয়।

অনেক আগেভাগে সন্তান প্রসব হয়। ৪০ সপ্তাহের নির্ধারিত সময়ের পরিবর্তে অনেকের ৩৭ সপ্তাহে সন্তান প্রসব হয়। নবজাতকের ওজন অনেক কম হয়। প্রসবের সময় মা ও সন্তান ইনজুরড বেশি হয়। অনেক ক্ষেত্রে অস্ট্রাকল লেবার বা ফিস্টুলা বা পেরিনিয়াল টিয়ার হয়। শিশুর মাথায় ট্রমা হয়।

সন্তান জন্মের পর মাকে স্তন্যদান করতে হয়। অথচ এ সময় তার নিজেরই পুষ্টির ঘাটতি থাকে। ফলে শিশু সঠিকভাবে দুধ পায় না। এভাবে টিনেজ মায়েরা বিশেষ সার্কেলে পড়ে যায়। এজন্য আমাদের উচিত হবে, কোনোভাবে বাল্যবিয়ে হয়ে গেলেও তারা যেনো ১৯ বছরের আগে সন্তান না নেয়।

১৯ বছর পার হলে যেনো গর্ভধারণ করে। সন্তান নেওয়ার আগে তাকে অবশ্যই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হবে। ভিটামিন খেয়ে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর পর যেন সন্তান নেয়। গর্ভকালীন নিয়মিত চেকআপে থাকতে হবে। অবশ্যই প্রথম সন্তান যেনো বাড়িতে প্রসব না করে, হাসপাতালে করে। তাহলে মায়ের সমস্যা কম হবে এবং সন্তানও ভালো থাকবে।



ইভেন্ট স্ট্রিম : নারী স্বাস্থ্য নিয়ে লেখাসমূহ